পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ৩ মে, ২০১৭

রাডার (বিজয় দিবস সংখ্যা): সম্পাদকীয়, পৃষ্ঠা - ৩

নিজের ঢোল নিজে বাজাই - ২
আমরা পাহাড় চিরে বেরিয়ে আসা
দুর্দান্ত ঝর্ণার মতো একঝাঁক প্রতিবাদী তরুণ।
তারুণ্যের অমোঘ শক্তিতে ছিন্ন করতে চাই
শত প্রতিকুলতা-জঞ্জাল-বাধাবন্ধন। 
ভাসিয়ে নিতে চাই সকল অন্যায়-অত্যাচার-শোষন-বঞ্চনা। 
প্রগতির উজান বেয়ে পৌঁছে যেতে চাই মুক্তির মোহনায়।
স্থান নেই এখানে সুবিধাবাদ ও শক্তির লেহী দালালদের।
আমরা নিপীড়িত মেহনতি মানুষের শত্রুদের
অকাতরে মৃত্যু কামনা করি।
বিরোধীতা করি সাম্রাজ্যবাদ, সাম্প্রদায়িকতা,
স্বৈরাচার আর সামরিক আধিপত্যের অশুভ শক্তির।
নিষ্কৃতি চাই নিয়ন্ত্রণের করাল থাবা থেকে।
ভাঙতে চাই জরাগ্রস্থ এই অপুংসক সমাজদেহকে। 
ইতিহাসের রক্ত ফেনিল পথ বেয়ে পৌঁছে যেতে চাই
শোষণহীন সমাজ ব্যবস্থার স্বর্ণাভ জগতে।
অতএব, প্রগতির মন্ত্রে বিশ্বাসী 
টগবগে তারুণ্যের আপোষহীন সংগ্রামী
বন্ধুদের খুঁজে বেড়াচ্ছি সন্তর্পনে।
বেরিয়ে এসো অচলায়তন -
প্রতিক্রিয়াশীলতার পাহাড় ভেঙে।
মহাকালের নতুন স্বপ্ন নিয়ে এসো
হাতে হাত মেলাই।
এগিয়ে যাই দুঃসাহসী অভিযাত্রায়। 
রুঢ় বাস্তবতার কষাঘাত চিরে অনিবার্য
বিজয় অর্জনে যায় যদি জীবনটা যাক।


যোগাযোগ (বার্তা ও চিঠি) :-
৩২০, পূর্ব বাড়ী, জগন্নাথ হল, ঢা, বি।
৩০৯, শান্তি নিকেতন, চ, বি।

প্রাপ্তিস্থানঃ-
পাঠক সমাবেশ, মুজিব হলের বিপরীতে, ঢাকা।
দীপ্র প্রকাশনী, ৬৮/২ পুরানা পল্টন, বাসস-এর নীচে।
কারেন্ট বুক সেন্টার, চট্টগ্রাম।
বুক স্টল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।
৩৫৬, নবাব আব্দুল লতিফ হল, রা, বি।

রাডার
সম্পাদকীয়
সুপ্রিয় পাঠক, প্রাণঢালা রক্তিম অভিবাদন। আপনাদের ব্যাপক সাড়া আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। স্রেফ “রাডার” কেনা অথবা  বেচার জন্যে অনেককে নিগৃহীত হতে হয়েছে। অনেককে পরতে হয়েছে শারীরিক নির্যাতনের মতো সহজলভ্য অলংকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঐ দানবীয় হিংস্রতা আপনাদের “মার্ডার হলেও রাডার কিনবো” - এই বুকফাটা বজ্র উচ্চারণকে রুদ্ধ করতে পারেনি। পারেনি রাডারের প্রতি আপনাদের অকৃত্রিম ভালোবাসাকে মার্ডার করতে। আমরাও আপনাদের অদম্য সাহস ও ভালোবাসাকে আমাদের বুকে ধারণ করে দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করতে চাই - “মার্ডার হলেও রক্ত-অক্ষরে নিপীড়িত-নির্যাতিত জনতার কথা লিখে যাবো রাডারের পাতায় পাতায়।”
তাই প্রিয় পাঠক, শ্যোন দৃষ্টির রোষানলে পড়েছি আমরা। শত্রুর সন্দেহজনক গতিবিধি রাডারে স্পষ্ট। সম্মুখে কর্কটের অশুভ রাহু উদ্যত। যে কোন মুহুর্তে ’৭৪ এর মরণাস্ত্র আবার আঘাত হানতে পারে রাডারকে। অসহ্য নরক যন্ত্রনায় গোঙাতে পারে আমাদের প্রচ- প্রতিবাদী কন্ঠ। তবুও আমরা শংকিত নই। কারণ তারুণ্যের মহাশক্তির কোনো মৃত্যু নেই। আমরা অনেক কাঠখড় পুড়িয়েছি রাডারের রাহুমুক্তিতে। প্রয়োজনে যে কোন অশুভ শক্তির অগ্নিকুণ্ডে তারুণ্যের সতীত্ত্ব পরীক্ষা দেবো অধিকারহারা দুর্ভাগা জনতার কথা বলতে। প্রিয় পাঠক, আমাদের সুখে, দুঃখে, বেদনাতে আমরা শুধু আপনাদের ভালোবাসার উঞ্চ উত্তাপ বুকে নিবিড়ভাবে অনুভব করতে চাই।
গণঅভ্যুত্থানের পর এক বছর পেরুলো। সামরিক স্বৈরাচার সরে গেছে শাসন কাঠামো থেকে। আজকের বিংশতিতম বিজয় বর্ষেও তো গণতন্ত্রের প্রাণখোলা নিঃশ্বাস নিতে পারছি না। গণতন্ত্রের আদ্যাক্ষরও ভাবা যায় না আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে। অলিখিত সামরিক শাসন চলছে সুদীর্ঘ কাল থেকে। এভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এ দেশের জওয়ান সেনাদের ভাবমূর্তিকে ধ্বংস করছে। হীন স্বার্থে সেনা ভাইদের অবতীর্ণ করানো হচ্ছে হানাদারের ভূমিকায়। একাত্তরে যারা দুর্ভাগা জনতার মুক্তির জন্য লড়েছিল জীবন বাজী রেখে, আজ তারাই পার্বত্য জনতার (অস্তিত্বের) সংগ্রামকে দমন করতে ব্যস্ত। কি বিচিত্র আমাদের এই দেশ।
আমরা সেনাবাহিনীর নয়, সেনাশাসনের বিরোধী। তাই আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে অচিরেই সেনাশাসনের অবসান কামনা করি। এই বিংশতিতম বিজয় বার্ষিকীতে নির্বাচিত সরকারকে অবশ্যই গণতন্ত্রের পরীক্ষা দিতে হবে।
প্রিয় পাঠক, সামনে ইংরেজী নববর্ষের অগ্রিম শুভেচ্ছা।

“হিল লিটারেচার ফোরাম” -এর পক্ষে “রাডার” প্রকাশনা কমিটি ও সম্পাদনা পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন