পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ২ মে, ২০১৭

রাডার (বিজয় দিবস সংখ্যা): পৃষ্ঠা: ২৮


প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিকট ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলফ্রেড টেলক্যাম্পার -এর চিঠি।

পার্লামেন্ট ইউরোপিয়ান                                                               প্রধান মন্ত্রী               
৯৭-১১৩ রু বেলির্য়াড                                                                মিসেস্ বেগম খালেদ জিয়া
এম, এ, ই ৭২৬                                                                       প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়, 
১০৭০ ব্রাসেলস                                                                        ঢাকা,  
 বেলজিয়াম।                                                                            বাংলাদেশ।

২০ শে সেপ্টেম্বর ১৯৯১

ডিয়ার মিসেস প্রধানমন্ত্রী,
পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের একজন সদস্য হিসেবে ১৯৯০ -এর ডিসেম্বরে আমি বাংলাদেশ সফর করি। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাঙ্গালী বসতিস্থাপনকারীদের দ্বারা মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগসমূহ তদন্ত করার জন্য এই মানবাধিকার কমিটির উদ্দেশ্য ছিল। আমাদের কমিশন “জীবন আমাদের নয়” শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে যেখানে আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপক মানবাধিকার লংঘনের ব্যাপারে আমাদের উদ্বেগ এবং সফরের তথ্য উল্লেখ করেছি। বর্তমানে আমি জানতে পারলাম, বাংলাদেশে এই রিপোর্ট সরবরাহকারী মানবাধিকার কর্মীদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বাংলাদেশ নাগরিক কমিটির মিঃ এস, এম, শহীদুল্লাহ ও রাশেদুর রহমান তারাকে পুলিশের বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার মিঃ তাবিবুর রহমান কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদ এবং হুমকি দেয়া হয় এবং আমাদের “জীবন আমাদের নয়” রিপোর্টের ৯৬০ কপি বাজেয়াপ্ত করা হয়। আমার জানা মতে আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের রিপোর্ট বাংলাদেশে নিষিদ্ধ নয় এবং সেহেতু এই রিপোর্টের পুনঃপ্রকাশ বা বিতরণ বেআইনী নয়। সবিনয়ে আপনাকে এই তথ্য অবগত করছি যে আমাদের কমিশনের সফর ছিল সম্পূর্ণ বৈধ এবং বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় এই সফর সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু যদি এই রিপোর্ট বিতরণ নিষিদ্ধ হয়ে থাকে তবে তাতে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও তথ্য বিনিময়ের মত মৌলিক মানবাধিকার লংঘিত হবে।

সুতরাং উপরোল্লেখিত মিঃ শহীদুল্লাহ এবং মিঃ তারাকে ভীতি প্রদর্শন ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমি জোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই রিপোর্টের জন্য পুলিশের বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা বা বাংলাদেশের অন্য সরকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশী নাগরিকদের হয়রানী বন্ধের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমি আপনাকে অনুরোধ করছি।
যদি পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের রিপোর্ট নিষিদ্ধ হয়ে থাকে তবে অনুগ্রহ পূর্বক আমাকে অবগত করান। আমি কমিশনের সকল সদস্যদের পক্ষ থেকে এই রিপোর্ট বিতরণের ক্ষেত্রে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লংঘন বন্ধ করার জন্য আপনাকে এবং আপনার সরকারকে আহ্বান করছি। এই রিপোর্ট ইউরোপিয়ান দেশগুলিতে এবং ইউরোপিয়ান কমিশনে বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষন করতে পেরেছে। আমি নিশ্চিত যে জাতীয় সরকারসমূহ এবং ইউরোপিয়ান কমিশন বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং এই পরিস্থিতির আলোকে তারা পারস্পরিক সম্পর্কের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।

ধন্যবাদান্তে
উইলফ্রেড টেলক্যাম্পার

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন