পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ২ মে, ২০১৭

রাডার (বিজয় দিবস সংখ্যা): পৃষ্ঠা: ২৭

গত সেপ্টেম্বর ১৩ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত জার্মানীর হামবুর্গ মিউজিয়াম অব এটনোলজিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কিত যে ৩য় আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়ে গেল সে সম্মেলনের একটি প্রেস রিলিজ আমরা পেয়েছি। সেই প্রেস রিলিজের ভাষান্তর ছাপানো হলোঃ

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
উন্নয়ন সাহায্যসমূহ বাংলাদেশে সামরিকীকরণ এবং মানবাধিকার লংঘনে সহায়তা করে।
সম্মেলনে বিষয়বস্তু ছিল বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার এবং উন্নয়ন সাহায্য। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের এক বিরাট অঞ্চল পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশের বৃহত্তর বাঙালী জনগোষ্ঠী থেকে সাংস্কৃতিক, জাতিগত এবং ভাষাগতভাবে ভিন্ন আদিবাসীদের আবাসভূমি। এই আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আগ্রাসনের শিকার।
সম্মেলনে কানাডা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রবাসী পাহাড়িসহ বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আদিবাসী জনগোষ্ঠী অংশগ্রহণ করেন। উক্ত সম্মেলনে কিছু বাঙালী অংশগ্রহণকারীও ছিলেন। সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট। এছাড়াও মানবাধিকার কর্মী এবং সমাজ বিজ্ঞানীরা বক্তব্য পেশ করেন।

উক্ত সম্মেলনে নিম্নলিখিত সত্য ঘটনাগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।
·        বাংলাদেশ সরকার অনেকাংশে বিদেশী সাহায্যের উপর নির্ভরশীল (সরকারী ব্যায়ের ৯০ শতাংশেরও বেশী)।
·        বৈদেশিক সাহায্যসমূহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সামরিক বাহিনীকে সাহায্য করে (ভতুর্কী দেয়)।
·        যদিও ১৯৯১ সনের ফেব্রুয়ারীতে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম এখনো সেনা নিয়ন্ত্রণের অধীন।
·        এই নতুন সরকারও আদিবাসীদের গণহত্যা, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণাধীন গ্রামে (তথাকথিত গুচ্ছগ্রাম) জোরপূর্বক পুনর্বাসন এবং ভূমি বেদখল সম্পর্কিত অভিযোগ নিরসনে ব্যর্থ হয়েছেন।
·        গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও মানবাধিকার লংঘন অব্যাহতভাবে চলছে।
·        সম্মেলনে সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ঘটে যাওয়া সামরিক অভিযান, গ্রাম ধ্বংস, হত্যা, ধর্ষণ, বেপরোয়া ধরপাকড়, নির্যাতন, চলাচলে বিধিনিষেধ এবং আদিবাসীদের নিজ বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ সম্পর্কিত রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়। ১৯৯১ -এর ২০শে মার্চ থেকে ২১ শে আগষ্ট পর্যন্ত ২১ টি ঘটনার রিপোর্ট পাওয়া গেছে।
·        সেনাবাহিনী কর্তৃক গুচ্ছগ্রামগুলিতে খাদ্য সরবরাহে নানা বিধিনিষেধের কারণে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ অবস্থা চলছে। অনেক অনাহারে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
·        সম্মেলনে অংগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছে প্রেরিত এক চিঠিতে বলেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অব্যাহত মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে তা যেন অতিসত্বর বন্ধ করা হয়। তারা এও বলেছেন যে এ সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান হওয়া উচিত এবং সকল রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেয়া উচিত।

সম্মেলনে আদিবাসীদের দাবী দাওয়ার প্রতি সমর্থন দেয়া হয় এবং নিঃশর্তে নি¤œলিখিত দাবীগুলো পূরণের জন্য সুপারিশ করা হয়।
·        সাংবিধানিক নিশ্চয়তার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের স্বায়ত্তশাসন দেয়া।
·        পার্বত্য চট্টগ্রামে সহসা বেসামরিকীকরণ, বেসামরিক শাসন প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু করা।
·        পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালী পুনর্বাসন বন্ধ করা।
·        যে সমস্ত বাঙালী অনুপ্রবেশকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রাম ছেড়ে চলে আসতে আগ্রহী তাদের পুনর্বাসনের জন্য সম্ভাব্য উন্নয়ন সাহায্য যোগানো।
·        বাঙালী অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা দখলকৃত ভূমি ও সম্পত্তিসমূহ প্রকৃত আদিবাসী পাহাড়ি মালিকদের ফেরত দান।
·        জাতিসংঘের বিশেষ তত্ত্বাবধানে পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার তদারকি করা। পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লংঘনে যে সকল উন্নয়ন এবং কর্মসূচী ভূমিকা রাখে সে সব উন্নয়ন সাহায্য এবং কর্মসূচী বন্ধ করার জন্য সম্মেলনে পশ্চিমা দাতা দেশ সমূহকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সম্মেলনে ভারত সরকারকেও নিম্নলিখিত সুপারিশ জানানো হয়-
·        বর্তমানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসকারী ৫৫ হাজারের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে উদ্বাস্ত পাহাড়ি জনগণকে শরণার্থীর মর্যাদা দান।
·        এই শরনার্থীদের জীবনের এবং সম্পত্তির নিশ্চয়তা দানের ভিত্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করা। সম্মেলনে আদিবাসী পাহাড়ি এবং বাঙালীদের সমন্বয়ে জাতীয় কমিটি গঠনের সাম্প্রদায়িক প্রস্তাবকে স্বাগত জানানো হয়। এই জাতীয় কমিটি মানবাধিকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি রাজনৈতিক সমাধানের জন্য কাজ করবে। এই জাতীয় কমিটিকে গত বছরের প্রথম দিকে গঠিত ইউরোপে জুম্ম পিপলস নেট ওর্য়াকস -এর মাধ্যমে সহায়তা দান করা হবে। 

বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুনঃ
Jumma peoples Network in Europe                                                                                                                  C/o International Work Group on Indigenous Affairs                                           Fiolstraede 10                                                                                                        1171 DK Copenhagen K.                                                                                        Denmark.                                                                                               
Phone – 45 33 124724                                                                                             Fax – 45 33 147749
বা

Organising Committee Chittagong Hill Tracts                                                               Campaign                                                                                                                           P.O. Box – 11699                                                                                                             1001 CR Amsterdam                                                                                                         The Netherlands.                                                                                                   
Phone – 31 20 6629953

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন