রাডার
হিল লিটারেচার ফোরামের
একটি অনিয়মিত প্রকাশনা
১৩ই এপ্রিল ’৯২
বৈসাবি সংখ্যা
পাতা: ৩
সম্পাদক : মি : সুপ্রিয়
নির্বাহী সম্পাদক : মি : মানবমিত্র
প্রধান প্রতিবেদক : মি : সৌরভ সিজেল
সার্কুলেশন ম্যানেজার :
মি : পল্লব
অংকন শিল্পী : মি : রসদ
শিল্প নির্দেশনা : মি : চাকমা ধীরব খীসা
যোগাযোগ (বার্তা ও চিঠি)
:-
৩২০, পূর্ব বাড়ী, জগন্নাথ
হল, ঢাঃ বিঃ।
প্রাপ্তিস্থান :-
পাঠক সমাবেশ, আজিজ কো-অপারেটিভ
মার্কেট, মুজিব হলের বিপরীতে, ঢাকা।
দীপ্র প্রকাশনী, ৬৮/২ পুরানা
পল্টন, বাসস-এর নীচে।
কারেন্ট বুক সেন্টার, চট্টগ্রাম।
৩৫৬, নবাব অব্দুল লতিফ
হল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
৪১৯/বি, শামসুল হক হল,
বাংলাদেশ কৃষি বিঃ ময়নসিংহ।
সম্পাদকীয়
·
সুপ্রিয় পাঠক,
“বৈ-সা-বি” উপলক্ষে আপনাদের জানাই রক্তিম শুভেচ্ছা। সাড়ে তিন মাস পর আবার জনতার অন্তরের
কথা বলতে রাডার বের হলো। এ দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস আমরা ছট্ফট্ করেছিলাম দুর্ভাগা জনতার
কথা বলতে। জানি, আপনারাও অধীর আগ্রহে সীমাহীন ধৈর্য্য নিয়ে অপেক্ষা করেছিলেন আমাদের।
কিন্তু, বিভিন্ন অসুবিধা ও সীমাবদ্ধতার কারণে এ সংযোগ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এর জন্য
আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
·
প্রিয় পাঠক,
বাংলা ক্যালে-ারের পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে কালের আবর্তে হারিয়ে দিলো আরো একটি
বছর। সেই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বাধিকারহারা দুর্ভাগা জনগণও অত্যাচার-উৎপীড়নের আবর্তে আবর্তিত হয়ে হারিয়েছে অনেক তাজা প্রাণ, অনিকা, অঞ্জনা,
অঞ্জলী ও বটুদের মতো নাম জানা-অজানা অনেক মা-বোন হারিয়েছে ইজ্জত, প্রদীপন, পুলক, অনিমেষ
-এর মত অনেক প্রাণোচ্ছল তগবগে তরুণ পরেছে “হাতকড়া”
নামক সহজলভ্য অলংকার। এই দুঃসহ নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে
অজস্র পাহাড়ি ছাত্র-জনতা। প্রতিবাদের লক্ষ ভাষায় কেঁপে উঠেছিল চিম্বুক, ফুরমৌন, ভগবানটিলা।
ঢাকা, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির রাজপথ প্রকম্পিত হয়েছিল প্রতিবাদী ছাত্র-জনতার
পদভারে। কিন্তু তবুও আমরা সেই কুৎসিত অত্যাচার-উৎপীড়নের আবর্ত
থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি এখনো। পারিনি হতে
স্বাধীন, শৃংখলমুক্ত মানুষ। এখনো আমাদের সবুজ পাহাড়ের কোলে শান্তির কপোত ওড়েনি। এখনো
আমরা আতংকিত ঘুমে দীর্ঘ দুঃস্বপ্নাচ্ছন্ন। আমাদের অনেকেই এখনো মাটির অন্ধকার প্রকোষ্টে
নরক যন্ত্রণায় কাতর। স্যাঁতস্যাঁতে কারা প্রাচীরে এখনো আমাদের ভাইয়েরা তন্দ্রাহীন রাত
পোহায়। দুঃখ-বেদনা ও দুঃসহ গ্লানি নিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যের জীর্ণ শরণার্থী কুটিরে এখনো
আমাদের হাজার হাজার জুম্ম নর-নারী প্রিয় জন্মভূমিতে ফেরার প্রহর গোনে।
·
তাই বিঝু আনন্দের
নয়। এই বিঝু নব চেতনা জাগরণের দিন। প্রতিবাদের লক্ষ মুষ্টিবদ্ধ হাত উর্ধ্বে তুলে ধরে
শপথ নেয়ার দিন। সেই বিঝুই হবে প্রকৃত বিঝু, সেই সাংগ্রাই হবে সবচেয়ে আনন্দঘন, সেই বৈসুক
হবে সবচেয়ে বেশী কোলাহলপূর্ণ- যেদিন
আমাদের বুকে আর নিপীড়ন নির্যাতনের আশংকা থাকবে না; যেদিন সবাই আমরা আবার আমাদের প্রিয়
পার্বত্য ভূমিতে মিলিত হতে পারবো। আমরা সেই কাংখিত বিঝু-সাংগ্রাই-বৈসুর জন্য এই বিঝু
উৎসর্গ করতে চাই। সেই বৈ-সা-বির জন্য আজকের বিঝুতে
আমরা ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ সংগ্রামে অবিচল, একনিষ্ট ও দৃঢ় থাকার অঙ্গীকার চাই।
·
প্রিয় পাঠক,
লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে বলছি আমরা নিদারুণ আর্থিক অনটনে ভূগছি। রাডার দেরীতে বেরুনোর
এই মূল কারণ। তাই বছরের ক্রান্তিকালের উৎসবে দশ টাকার উৎপাত সহ্য
করুন। দোহাই আমরা চাঁদাবাজ নই। বিনিময়ে দিই ঝরঝরে লেখায় সমৃদ্ধ তাজা রাডার।
·
শেষে বাংলা
নববর্ষের প্রাণঢালা উঞ্চ ভালোবাসা।
-----------------------------------------------------------------------------------------
-----------------------------------------------------------------------------------------
“হিল লিটারেচার ফোরাম”
-এর পক্ষে “রাডার” প্রকাশনা কমিটি ও সম্পাদনা পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন